ফিজি
আজ এমন একটি দেশ নিয়ে কথা বলব যা আপনাদের মজার কিছু তথ্য দিবে। চলুন শুরু করা যাক। পৃথিবীর অনেক মানুষ ফিজি সম্পর্কে এবং সেখানে থাকা মানুষ সম্পর্কে খুব কম জানে।ফিজি প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত একটি ছোট দেশ। এটি ৩০০ টি দ্বীপ ও ৫৪০ টি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত।
ফিজি তথ্য
অঞ্চল: প্রশান্ত মহাসাগর
জনসংখ্যা: ৮৮৩ ,৪৮০ (২০২২)
আয়তন: ১৮,২৭২ বর্গ কিলোমিটার
রাজধানী : সুভা
কমনওয়েলথ যোগদান: ১৯৭০, ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতার পরে; সদস্যপদটি অক্টোবর ১৯৮৭ থেকে অক্টোবর ১৯৯৭, জুন ২০০০ থেকে ডিসেম্বর ২০০১ এবং ডিসেম্বর ২০০৬ থেকে সেপ্টেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত স্থগিত ছিল
কমনওয়েলথ যুব সূচক: ৪৯ টির মধ্যে ২৫ টি
ফিজির প্রকৃতিদিক
প্রকৃতিগত দিক থেকে ফিজিকে একটি সুন্দর দেশ মানা হয় এবং ফিজি আইল্যান্ড দুনিয়ার 15 টি আইল্যান্ড এর মধ্যে একটি। এজন্য প্রতিবছর এখানে লক্ষ পর্যটক বেড়াতে আসে। এখানকার জনসংখ্যার প্রায় 9 লাখ এর কাছাকাছি। যার মধ্যে ৫৪ শতাংশ লোক প্রাচিন ফিজি থেকে এবং প্রায় 38 শতাংশ লোক ভারত থেকে এসেছে। এজন্য ফিজির ভাষার সাথে হিন্দি ভাষায় ও বলা হয়।
ফিজি পরিচিতি
এখানে ফিজির জনসংখ্যার মধ্যে অনেকে খ্রিস্টান ধর্ম পালন করে। এখানকার ভারতীয় বেশিরভাগ লোকই হিন্দু ও মুসলমান এখানকার জনসংখ্যার প্রায় ছয় থেকে সাত পার্সেন্ট মুসলমান । প্রাচীন ফিজির লোকেরা কালোজাদুতে খুবই পারদর্শী ছিলেন। বলা হয় এখানকার লোকেরা আগে আত্মার সাথে কথা বলত এবং তাকে বশ করতো। আপনি যদি ফিজিতে বেড়াতে যেতে চান তাহলে একটি শব্দ অবশ্যই শিখে রাখবেন। সেটি হল বুলা। বুলা মানে হ্যালো। প্লেন থেকে নামার পর এই দেশ ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত আপনি এই শব্দ শুনতে পারবেন আর ফিজিতে গিয়ে আপনি যদি তাদের লোকাল গ্রামে বেড়াতে যান তাহলে ভুলেও হ্যাট বা সানগ্লাস লাগাবেন না কারণ শুধুমাত্র গ্রামের প্রধানরাই এটি পরার অধিকার রাখে।
ফিজি আয়ের উৎস
এখানকার সব থেকে বড় উৎসব হলো চিনি রপ্তানি । এছাড়াও গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি ও পর্যটন হলো ফিজির আয়ের উৎস। ফিজির মুদ্রা হল ফিজিয়ান ডলার। ফ্রিজিয়ান ডলার বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় 40 টাকার সমান কিন্তু এখানে স্থানীয় মুদ্রার চেয়ে ইউএস ডলার বেশি চলে। ফিজির রাজধানীর নাম ছুভা।ফিজির চলাফেরা অন্যদেশের থেকে অনেক ভালো।
নিচের বিষয়গুলো জানতে ঘুরে আসতে পারেন
►►কিভাবে রোমানিয়ার PR পাওয়া যাবে
►►ইউরোপে বাংলাদেশিদের অ্যাসাইলাম আবেদন গ্রহণ হচ্ছে না
►►সেনজেন ভুক্ত দেশের তালিকা
ফিজি সংস্কৃতি
এদেশের সংস্কৃতি বিচিত্র আফ্রিকার অনেক দেশের মতো। যদি কখনো ফিজিতে যান তাহলে তাদের ঐতিহ্যবাহী ডান্স দেখে আসতে ভুলবেন না।
ফিজির লোকদের চরিত্র ও পর্যটকদের ব্যবহার খুবই ভালো বলে মনে করা হয়। এটি বাংলাদেশ ও ভারত থেকে অনেক দূরের একটি দেশ তারপরেও এতো ভারতীয় লোক এখানে থাকা অনেক আশ্চর্যের বিষয়। আসলে ভারত যখন ব্রিটিশদের অধীনে ছিল তখন ভারতের মতো ফিজিও ব্রিটিশদের অধীনে ছিল। ওই সময় ব্রিটিশরা ফিজির বসবাস কে শক্তিশালী করতে চেয়েছিল। সেইসাথে সেখানে পণ্য উৎপাদনের জন্য ভারতীয়দের আনা হয়েছিল। যেখানে বেশিরভাগ ভারতীয়রা উত্তর–পশ্চিম ভারতের ছিল। বেশিরভাগ ভারতীয়রা গরিব ছিল । কখন চুক্তি শেষ হলো তখন ব্রিটিশরা ভারতীয়দের ভারত ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল কিন্তু বেশিরভাগ ভারতীয়রা ফিজিতে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং এখানে তাদের বসবাসের জায়গা করে নিয়েছিল।
ফিজির দ্বীপপুঞ্জ
ফিজির বেশিরভাগ দ্বীপপুঞ্জ প্রায় দেড় কোটি বছর আগে শুরু হওয়া আগ্নেয়গিরির ক্রিয়াকলাপ দ্বারা গঠিত হয়েছিল। ভানুয়া লেভু এবং তাভেউনি দ্বীপপুঞ্জে আজও কিছু ভূ–তাপীয় কার্যকলাপ দেখা যায় occurs [১৫] ভিটি লেবুতে ভূ–তাপীয় সিস্টেমগুলি মূলত অ–আগ্নেয়গিরির, এবং নিম্ন–তাপমাত্রা পৃষ্ঠের স্রাব থাকে (প্রায় 35 থেকে 60 ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে)।
মানুষ ফিজিতে দ্বিতীয় খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দের সময় থেকে বাস করেছে – কিছু পলিনেশিয়ান প্রভাব নিয়ে প্রথম অস্ট্রোনেশিয়ান এবং পরে মেলানেশিয়ানরা। ইউরোপীয়রা ১৭ শতকে প্রথমে ফিজি ভ্রমণ করেছিল। ১৮৭৪ সালে, ফিজি একটি স্বতন্ত্র রাজত্ব হিসাবে সংক্ষিপ্ত সময়ের পরে, ব্রিটিশরা ফিজির কলোনী স্থাপন করেছিল। ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ফিজি ক্রাউন কলোনি হিসাবে কাজ করেছিল, যখন এটি স্বাধীনতা অর্জন করে এবং ফিজির ডোমিনিয়ন হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৮৭ সালে, একাধিক অভ্যুত্থানের পরে, সামরিক সরকার যে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল, তারা এটিকে প্রজাতন্ত্র হিসাবে ঘোষণা করেছিল।২০০৬ সালের অভ্যুত্থানে কমোডোর ফ্রাঙ্ক বেনিমারাম ক্ষমতা দখল করেছিলেন। ২০০৯ সালে, ফিজিয়ান হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল যে সামরিক নেতৃত্ব বেআইনী ছিল। এই মুহুর্তে, রাষ্ট্রপতি রাতু জোসেফা ইলোইলো, যাকে সামরিক বাহিনী নামমাত্র রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে ধরে রেখেছিল, 1997 সালের সংবিধানকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করে দিয়ে এবং বনিমারামকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে পুনরায় নিয়োগ করেন। পরে ২০০৯–এ, রাতু এপেলি নাইলাইটাকাউ ইলাইলোর পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি হন। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর কয়েক বছরের বিলম্বের পরে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বেনিমারামার ফিজি ফার্স্ট পার্টি ৫৯.২% ভোট পেয়েছিল এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করেছেন।
ফিজির প্রচুর বন, খনিজ এবং মাছের উত্সের মাধ্যমে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে উন্নত অর্থনীতি রয়েছে। মুদ্রা হ‘ল ফিজিয়ান ডলার, বৈদেশিক মুদ্রার মূল উত্স পর্যটন শিল্প, ফিজিয়ানদের বিদেশে কর্মরত রেমিট্যান্স, বোতলজাত জলের রফতানি এবং চিনির বেত। স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রক ফিজির স্থানীয় সরকার তদারকি করে, যা শহর ও নগর পরিষদ রূপ নেয় । এই ছিল ফিজি সম্পর্কে মজার মজার ও অজানা কিছু কথা । ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
Leave a Reply