ইউরোপ মহাদেশের একটি দেশ হচ্ছে লাক্সেমবার্গ ।মাথাপিছু আয়ের দিক দিয়ে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। লাক্সেমবার্গ এর সরকারি নাম গ্র্যান্ড ডাচি অফ লাক্সেমবার্গ ।লাক্সেমবার্গের সরকারি মুদ্রার নাম ইউরো।১ ইউরো সমান প্রায় বাংলাদেশী ৯৪ টাকা ও ৭৯ ভারতীয় রুপি। এটি পশ্চিম ইউরোপে অবস্থিত একটি স্থলবেষ্টিত দেশ। ইতিহাস ঐতিহ্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার এই ছোট্ট দেশটি।লাক্সেমবার্গ সিটি লাক্সেমবার্গের এর রাজধানী এবং দেশটির সবচেয়ে জনবহুল শহর। দেশটি পশ্চিম ইউরোপের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। ইউরোপের অন্যান্য শহরগুলোর মতোই লাক্সেমবার্গ সিটিও ছবির মতো সুন্দর।
লুক্সেমবার্গ একটি ছোট ইউরোপীয় দেশ, বেলজিয়াম, ফ্রান্স এবং জার্মানি দ্বারা বেষ্টিত। এটি বেশিরভাগ গ্রামাঞ্চলে, উত্তরে আর্দনেস বন এবং প্রকৃতি উদ্যানগুলি, পূর্বে মুলারথল অঞ্চলের পাথুরে গিরিগুলি এবং দক্ষিণ-পূর্বে মোসেল নদী উপত্যকা। এর রাজধানী লাক্সেমবার্গ সিটি নিখরচায় মধ্য প্রাচীর প্রাচীন শহর হিসাবে খ্যাতিমান।
রাজধানী: লাক্সেমবার্গ
ডায়ালিং কোড: +৩৫২
জনসংখ্যা: ৬১৩,৮৯৪ (২০২০)
ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যা এবং জলবায়ু।
দেশটির উত্তর ও পশ্চিমে বেলজিয়াম পূর্বে জার্মানি এবং দক্ষিণে অবস্থিত। ২,৫৮৬.৪ বর্গ কিলোমিটার দেশটিতে মোট জনসংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ১৩ হাজার।আয়তনের দিক দিয়ে এটি পৃথিবীর ২৮ তম ক্ষুদ্র তমদেশ। লাক্সেমবার্গে একটি মধ্যম মহাদেশীয় জলবায়ু বিদ্যমান। শীতকালে গড় তাপমাত্রা প্রায় ০°সেলসিয়াস ও গ্রীষ্মকালের তাপমাত্রা ১৭°সেলসিয়াস।
ইতিহাস ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি
দেশটির প্রথম লিপিবদ্ধ ইতিহাস যদিও রোমান সময়কে নিয়ে ইঙ্গিত করে কিন্তু আসলে এর ইতিহাস শুরু হয়েছিল ৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে। পরবর্তী পাঁচ শতাব্দী ধরে শক্তিশালী হাউস অফ লাক্সেমবার্গের উত্থান ঘটে। পরবর্তীতে এর বিলুপ্তি দেশটির স্বাধীনতার অবসান ঘটায়। পরবর্তীতে লাক্সেমবার্গ দক্ষিণ নেদারল্যান্ডের একটি অংশে পরিণত হয়। পরবর্তীতে ১৮৬৭ সালে তারা দেশকে স্বাধীন ঘোষণা করে । কিন্তু এরপরেও ১৯১৪–১৮ ও পুনরায় ১৯৪০–৪৪ সাল পর্যন্ত দেশটি জার্মানদের দখলে ছিল।
লুক্সেমবার্গ হ’ল ইউরোপের জার্মানিক এবং রোমান্স-ভাষা সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগের একটি বিষয় এবং তিনটি ভাষা নিয়মিত গ্র্যান্ড ডুচিতে নিযুক্ত করা হয়: লাক্সেমবার্গীয়, জার্মান এবং ফরাসী। লাক্সেমবার্গের লোকেরা এবং তাদের ভাষাগুলি গ্র্যান্ড ডুচির সাধারণ আগ্রহ এবং এর প্রতিবেশীদের সাথে ঘনিষ্ঠ ইতিহাস সম্পর্ককে প্রতিফলিত করে। বিংশ শতাব্দীতে লাক্সেমবার্গ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়েছিলেন। সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, গ্র্যান্ড ডুচি ছিলেন বেনেলাক্স ইকোনমিক ইউনিয়নের (১৯৪৪) একজন আধ্যাত্মিক সদস্য, যা তার অর্থনৈতিক জীবনকে নেদারল্যান্ডস এবং বেলজিয়ামের সাথে সংযুক্ত করেছিল এবং পরবর্তীকালে ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সম্প্রদায়ের (ইসিইসি) এর মূল গঠন করে ।
ধর্মীয় অবস্থা
দেশটির প্রধান ধর্ম হচ্ছে খ্রিস্টধর্ম। দেশের প্রায় ৭৩ শতাংশ মানুষ খ্রিষ্টান ও ২৩ শতাংশ মানুষ কোনো ধর্মে বিশ্বাসী নন। ৩% মানুষ ইসলাম, ১% মানুষ বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী।
অর্থনৈতিক অবস্থা
ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত লাক্সেমবার্গ। দেশটি বিনামূল্যে জনসাধারণের জন্য গন পরিবহন ব্যবস্থা চালু করেছে।দেশটিতে আছে ১৫৫ টিরও বেশি ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান।সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা অপেক্ষাকৃত স্বল্প হারের কর্পোরেট ট্যাক্স ও সুবিধাজনক ব্যবসায়িক পরিবেশ এবং সুদক্ষ জনগোষ্ঠী দেশটির অর্থনীতির চালিকাশক্তি।লাক্সেমবার্গকে ট্যাক্সের স্বর্গ বলা হয়ে থাকে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে ব্যবসা করলে অনেক টেক্স বা কর দিতে হয় কিন্তু এই দেশটিতে ঠিক উল্টো। এজন্যই অনেক কোম্পানির সদর দপ্তর এ দেশে অবস্থিত। দেশটির অর্থনীতি মূলত ব্যাংকিং, ইস্পাত এবং শিল্প কারখানার উপর নির্ভরশীল।
নিচের বিষয়গুলো জানতে ঘুরে আসতে পারেন
►সেনজেন কাকে বলে ? বিস্তারিত জানুন ।
►পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেছে যে সকল দেশ |
►►আয়ারল্যান্ড দেশ – সকল তথ্য সমূহ
►►ফিজি দেশ
►►আজারবাইজান দেশ -সকল তথ্য সমূহ
পর্যটন শিল্প
লাক্সেমবার্গের অন্যতম প্রধান সেতু আ্যাডলফ সেতু দেশটির প্রধান আকর্ষণ। ১৯০০–১৯০৩ সালে এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। দেশটিতে প্রায় 21 মিটার উঁচু স্মৃতিস্তম্ভের উপরে রয়েছে সোনার তৈরী গোল্ডেন লেডি ভাস্কর্য । দেশটিতে প্রায় অনেক দুর্গ বা প্রাসাদ রয়েছে। এজন্য দুর্গের দেশ বলা হয়ে থাকে দেশটিকে।
শিক্ষাব্যবস্থা ও খেলাধুলা
৪– ১৬বছর বয়সীদের পড়ালেখা বাধ্যতামূলক দেশটির প্রায় 99 শতাংশ মানুষ শিক্ষিত।লাক্সেমবার্গে
খেলাধুলা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।দেশটিতে প্রচলিত কিছু খেলার মধ্যে বাস্কেটবল এবং হ্যান্ডবল অনেক জনপ্রিয়।
Leave a Reply